বিশ্বনাথে সংবাদ সম্মেলন বিশ্বনাথে মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীকে মারধর সহ গাছপালা কর্তন, ভয়ে বাড়ি ছাড়া বাদী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
বিশ্বনাথে নিজ বসতঘরে বিবাদী কর্তৃক হামলা শিকার হয়েছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ নেয়নি মামলা, হামলাকারীদের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলার বাদী এমন অভিযোগ করে লিখিত সংবাদ পাঠ করে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের জাগীর আলা গ্রামের নোমান আহমদ এর পরিবার।
শনিবার ( ২৮ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রেসক্লাব অফিসে ভুক্তভোগী নোমান আহমদের স্ত্রী ও ২ ছেলে এবং মামার উপস্থিতিতে উক্ত সংবাদ সম্মেলনটি করেন।
এসময় নোমান আহমদ তাঁর লিখিত বক্তব্য কালে উল্লেখ করেন। ২০২৩ সালের ২১ জুলাইয়ের একটি ঘটনার বিষয়ে ২৩ সালের পহেলা আগস্ট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। উক্ত মামলায় প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী সুজন মিয়া গং ৬জন কে অভিযুক্ত করে উক্ত মামলাটি দায়ের করেন। মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। মামলাটি প্রত্যাহার করতে বিবাদীরা চাপ প্রয়োগ করে। মামলা প্রত্যাহার না করায় বিবাদীরা একাধিকবার তাদের উপর হামলা, মারধর, মোবাইল ও টাকা ছিনতাই সহ বাড়ির গাছপালা কেটে নিয়ে যায়। বিষয়টি বিশ্বনাথ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ নিরব ভুমিকা পালন সহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত প্রদক্ষে নেয়নি।
এছাড়া তিনি আরো উল্লেখ করেন:
২০২৩ সালে বিবাদী পক্ষ আমার বাড়ির গাছপালা জোরপূর্বক কেটে ফেলে, আমার নিরিহ পরিবারে উপর অত্যাচার নিপিড়ন করায় এবং গাছ কর্তনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা না নিলে মামলাটি সিলেট আদালতে দায়ের করে নোমান আহমদ। বিবাদী পক্ষ অত্যান্ত খারাপ প্রকৃতির দাঙ্গাবাজ এবং প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা করার পর থেকে তারা নিয়মিত মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি, মারধর করার ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। সর্বশেষ মামলা প্রত্যাহার না করায় গত ১৪ই জুন ২০২৫ ইং তারিখে বিবাদীগন নোমান আহমদ এবং তার স্ত্রী ও ২ ছেলে কে তাদের নিজ বাড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে সংবদ্ধ ভাবে মারধর করতে আসে। মারধর করে মোবাইল ও টাকাপয়সা নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় প্রানে মেরে ফেলার হুমকিধামকী দিয়ে পরিবারের সবাইকে একপ্রকার জিম্মি করে রাখে। এরপর পাশ্বর্তী প্রতিবেশীদের সহায়তায় তারা চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন। মারধরে সময় বিষয়টি তাৎক্ষনিক ট্রিপল নাইনে পুলিশকে অবগত করেন ভিকটিম নোমান আহমদ। চিকিৎসাধীন থাকাবস্তায় ঐদিন তাঁরা বিশ্বনাথ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগটি পুলিশ আমলে না নিয়ে নিরব ভুমিকা পালন করে।
বিশ্বনাথ থানায় কোন সহযোগীতা না পেয়ে উক্ত বিষয়টি ১৬ জুন বিবাদীদের উপর দায়ের করা পূর্বের মামলার ধায্য তারিখে আদালতে উত্থাপন করেন সংবাদ উপস্থাপনকারী নোমান আহমদ। ঐদিন অর্থাৎ ১৬ তারিখ সন্ধায় বিশ্বনাথ থানার পুলিশ সরজমিন ঘটনাস্থল (বাড়িতে যায়) এবং ঘটনার বিবরণ অবগত হয়। এরপরে ও মারামারির কোনো মামলা পুলিশ রেকর্ড না করায় হতাশা প্রকাশ করেন নোমান আহমদ।
এই ঘটনার পর ২১ শে জুন মামলার বিবাদীগন নোমান আহমদ এর বাড়ির ভুমিতে লাগানো বিভিন্নরকম গাছপালা কেটে রেখে যায় এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের পুনরায় হুমকিধামকি দেয়। তাদের হুমকিতে ছেলে মেয়ে নিয়ে বাড়িঘর ফেলে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন এখন তিনি। তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, যে কোন সময় আবারও তারা আমাদের উপর হামলা করতে পারে। তারা আমার নিরাপরাধ বাচ্চাদেরও প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে। এই হুমকিতে আমি আমার ছেলেদের এখন স্কুলে যেতে দিতে মারাত্মক ভয়ে আছি। তাদের পড়ালেখা নিয়ে আছি উদ্বিগ্ন। ছেলেদের স্কুলে যাওয়া বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বারবার ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিডিও সহ পুলিশকে পুনরায় অবগত করেও কোন লাভ হয়নি। পুলিশের নিরব ভুমিকা নিয়ে আমরা সন্দিহান। বিচারের জায়গায় এমন নিরবতা যদি থাকে তাহলে আমাদের জানমালের নিরাপত্তার পাব কার কাছে এমন প্রশ্ন রাখেন প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ?
বিষয়টি প্রশাসন যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় ,হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসে এমন আহবান জানান পরিবারের পক্ষ থেকে। নিরাপত্তহীনতায় ভোগছেন তারা এমন দাবীও উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগের বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার এসআই অনিক বড়ুয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান ; বাদী ১৪ই জুন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বনাথ থানায়। তদন্ত করে দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলেমান রয়েছে। পূর্বের মামলার ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নোমান আহমদ এর স্ত্রী মুর্শেদা বেগম, ছেলে সুলতান আহমদ, তাসকিন আহমদ, নোমান আহমদ এর মামা মোঃ আবু সালেহ। সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শাহিন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েস্তা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী অজিত চন্দ্র দেব, দপ্তর সম্পাদক কবি এস.পি সেবু, অর্থ সম্পাদক মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, সমাজসেবক এসএম রফিক আহমদ প্রমুখ।
0 Comments